ভূত চতুর্দশীর রাত
তখন আমি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র, সেদিন ক্লাস শেষে পূজোর ছুটি ঘোষণা করল। শ্যামল বলল এবছর আমার বাড়িতে তোর নেমন্ত্রন কালী পূজোয় আমাদের বাড়ি যেতেই হবে। আমাদের পাড়ায় এবছর বেশ ধুমধাম করে কালী পূজো হবে। তাই তোকে আসতেই হবে কোনো বাহানা শুনবো না কিন্তু । সে বার বার করে বলে গেল কালী পূজার দিন চার আগেই যেতে। আমিও শ্যামলকে কথা দিলাম বেশ তাই হবে । কথা মতো বন্ধুর নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে শ্যামলদের বাড়িতে কালী পূজার চার দিন আগেই পৌছালাম । কার্তিক মাসের মাঝামাঝি সময়, তখন হালকা শীতের আমেজ এসে গেছে। শ্যামলদের বাড়ির পাশের ছাতিম গাছটার ফুলের গন্ধে চারিদিক ম- ম করছে। আমি ও আমার বন্ধু শ্যামল দুজনে ওদের বাড়ির ছাদে বসে আড্ডা মারছি। আড্ডায় রাজনীতি থেকে শুরু করে নানান ধরনের কথা উঠল, এমন সময় ভূতের কথা উঠল ভূতের অস্তিত্ব আছে কি নেই ? এই নিয়ে রীতিমত একটা বাকযুদ্ধ বেঁধে গেল দুজনের মধ্যে। শ্যামল আমাকে বেশ কয়েকটা ভৌতিক কাহিনী শুনিয়ে দিল , সে নাকি তার ঠাকুরদার কাছে শুনেছে এই সব ঘটনা। আমি ভূতে বিশ্বাসী নই তাই আমি শ্যামলের কথায় কান দিই নি। বললাম ওসব আজগুবি কথা বাদ দে তো। শ্যামল বলল ঠিক আছে তোর ভূতে বিশ্বাস নেই তো ? করতেও হবে না। তুই ভূত চতুর্দশীর রাতে আমাদের ঐ নদীর পাড়ে একটা পোড়ো জমিদার বাড়ি আছে, ওখানে রাত কাটিয়ে আসিস, তাহলেই ওনারা যে আছেন তার চাক্ষুস প্রমাণ দিয়ে যাবেন তোকে। শ্যামল বলল ভূতের ভয়ে সন্ধ্যার পর আমাদের এলাকার কোনো লোকই ওদিক মাড়ায় না। সে যাই হোক, আমি এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম । ওরকম ভূতুড়ে গল্প ও ভৌতিক ঘটনা আমি অনেক শুনেছি, এরকম অনেক জায়গায় রাতও কাটিয়ে এসেছি এর আগে। কোনো দিন কারো অস্তিত্ব টের পাওয়া তো দূরের কথা দু চারটে জন্তু জানোয়ার ছাড়া আর কারোর দেখাও মেলেনি। আমার বিশ্বাস ঐ পোড়ো বাড়িকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ভূতের আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে তা নিতান্তই সাধারণ ও জাগতিক ঘটনা। দুর্বল মনের কল্পনা ও মনের ভয় ছাড়া আর কিছুই নয়।ইহ জগত ছাড়া আর অন্য জগতের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ই নেই। দুই দিন পর ভূতচতুর্দশীর দিন এসে গেল। শ্যামল বলল ভূতের অস্তিত্ব যে নেই তা প্রমাণ করতে হলে তোকে সারা রাত ঐ পোড়ো জমিদার বাড়িতে একা রাত কাটাতে হবে। যাই হোক আমি এক কথায় রাজি হয়ে গেলাম। ওদের গ্রাম থেকে নদীর দূরত্ব প্রায় ৩ কিমি। তাই সন্ধ্যা নামার আগেই আমি খেয়ে দেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম। শ্যামল আমাকে রাস্তা দেখিয়ে দিয়ে গেল বলল এই পথ ধরে সোজা হাঁটলেই তিরিশ মিনিট লাগবে নদী পৌছাতে। হাঁটা পথ গ্রাম থেকে নদী পর্যন্ত সরু কাঁচা রাস্তা । গ্রাম থেকে কিছু টা দূরে একটা ছোট জঙ্গল পেরোতে হয় এবং ঐ জঙ্গল পেরিয়ে আরো কিছুটা এগিয়ে গেলেই নদী । হাঁটতে হাঁটতে জঙ্গলে প্রবেশ করলাম । জঙ্গলে যখন প্রবেশ করলাম তখন সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। জঙ্গল ঘন নয় বেশ কিছু বড়ো বড়ো গাছ ও লতা গুল্মে ভরা । রাস্তা বেশ সংকীর্ণ, রাস্তার দুইপাশে বড়ো বড়ো গাছের সারি। সন্ধ্যা নেমে এসেছে তাই গাছে গাছে পাখি ডাকছে। কিছুক্ষণ হাঁটার পর নদীতে পৌঁছে গেলাম। তখন সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত হয়ে গেছে। আমার সম্বল বলতে একটা টর্চ নদীর রাত বেশি ঠাণ্ডা হবে জেনে শাল ও সোয়েটার ও বন্য জন্তুর হাত থেকে রক্ষা পেতে একটি বেশ মোটা মাপের লাঠি। টর্চ হাতে আস্তে আস্তে ঐ পোড়ো বাডির দিকে এগিয়ে গেলাম। টর্চের আলোতে প্রথম চোখে পড়ল দোতলা বাড়িটি। নির্জন বাড়িটি নদীর পাড়ে একাকী দাঁড়িয়ে রয়েছে কত ইতিহাস বুকে নিয়ে। প্রথমে বাড়ির চারপাশ ভালো করে পর্যবেক্ষন করে নিলাম। বিষধর সাপ ও নানান বন্য জন্তু জানোয়ারের ভয় তো আছেই। তারপর আপন মনে গুন গুন করে গান গাইতে গাইতে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলাম। চুন সুরকির পুরোনো বাড়ি। বাড়ির মেঝেতে ধুলো ও শুকনো পাতার আস্তরণ জমে আছে এদিক সেদিক মাকড়সার জালের পুরু চাদর বোনা। মাকড়সার জাল সরিয়ে আমি সিঁড়ির কাছে পৌছালাম। পূর্ব দিকে দোতলায় ওঠার সিঁড়ি। নীচে ছয়টি রুম ও খোলা বারান্দা। বাড়ির ভেতরের অন্ধকার যেন আরও ঘন ও পুরু । মনে হল পরিচিত পার্থিব জগত থেকে কোনো অপার্থিব জগতে প্রবেশ করলাম আমি। বাড়িটির নীচ তলায় চারটে রুম ও টানা বারান্দা। বাড়ির দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে কোনো কোনো জায়গায় পলেস্তারা খসে পড়েছে । জীর্ণ কঙ্কালসার দেহের মতোই বাড়িটি দাঁড়িয়ে আছে । তার অস্তিত্বের জানান দিচ্ছে। আমি সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠলাম। আমার টর্চের আলোতে বাড়িটি হয়তো প্রথম বারের জন্য আলোকিত হল বহু শতাব্দী পরে। হাতঘড়িতে তাকিয়ে দেখি রাত প্রায় আটটা বেজে গেছে। উপরতলার সমস্ত ঘর ভালো করে নিরীক্ষণ করে নিলাম এবং উপর তলার সিঁড়ির কাছের রুমটি একটু পরিস্কার করে নিলাম এবং এখানেই আজ রাত কাটাবো বলে স্থির করলাম, কারণ উপর তলায় অন্তত বন্য জন্তুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। দেখতে দেখতে রাত ঘনিয়ে এল। হাতঘড়ির দিকে চেয়ে দেখলাম রাত দশ টা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি আছে। জানালা গুলো মোটামুটি ভালোই আছে কিন্তু জানালার পাল্লা গুলো ভাঙ্গা। তাই হু হু করে নদীর শীতল বাতাস ঘরে প্রবেশ করতে লাগল। বাড়ির কিছুটা দূরে একটা শেয়াল করুন স্বরে ডেকে উঠল। যেন অশরীরী দের আগমনের কথা জানান দিচ্ছে সে। আমি জানালা থেকে নীচে টর্চের আলো ফেললাম। দেখলাম একটা মোটা খেঁকশিয়াল ও তার দলবল দাঁড়িয়ে আছে। টর্চের আলো পড়তেই সামনের ঝোপটার আড়ালে লুকিয়ে গেল। রাত ক্রমশ গভীর হয়ে এলো । কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি র পর ঘড়ির দিকে চেয়ে দেখি বারোটা বেজে তিরিশ মিনিট। আমি উপর তলায় নিজেকে বেশ নিরাপদ ভেবে মাদুর পেতে শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণ পরেই চোখে ঘুম জড়িয়ে এলো। কতক্ষন ঘুমিয়েছি জানিনা। একটা হালকা অথচ গম্ভীর শব্দে তন্দ্রা ভেঙে গেল । ঠিক যেন ছাদের উপর ছোটাছুটি করলে যেমন আওয়াজ হয় ঠিক সেরকম। কিন্তু ছাদে গিয়ে কাউকে দেখতে পেলাম না। মনের ভুল ঘুমের ঘোরে ভুল শুনছি ভেবে নীচে নেমে এলাম। ভূতচতুর্দশী র নিকষ কালো অন্ধকার রাতে নির্জন নদী তীরের শতাব্দী প্রাচীন বাড়িতে একাকী আমি শুয়ে। যেন গাঢ় অন্ধকার পুরো বাড়িটাকে গ্রাস করেছে। এইসব ভাবতে ভাবতে আবার ঘুমিয়ে পড়লাম। অর্ধেক রাত্রে ঘুঙুর এর শব্দে আমার ঘুম ভেঙে গেল। নাহ আমি ভুল শুনছি না স্পষ্ট শুনতে পেলাম যেন কেউ ঘুঙুর পায়ে বাড়ির এদিক ওদিক হেঁটে বেড়াচ্ছে। কখনও বাড়ির ছাদে তো কখনও নীচের তলার ঘরে। থেমে থেমে ঘুঙুরের আওয়াজ কানে আসতে লাগল। আমি সঙ্গে সঙ্গে টর্চ হাতে লাঠি টা বাগিয়ে ধরে নীচে নেমে এলাম বাড়ির সমস্ত রুম ভালো করে দেখলাম ছাদেও ঘুরে এলাম একবার কিন্তু কাউকে দেখতে পেলাম না। তারপর ভাবলাম যে এই ঘুঙুরের আওয়াজ করছে সে নিশ্চই হাওয়ায় ভেসে আসেনি তাহলে দেখতে পেলাম কই ? আমি এই সব কথা ভাবতে ভাবতে উপরতলার ঘরে চলে এলাম। তখন মাঝরাত দুটো আড়াইটে হবে হয়তো । আমি আবার ঘুমোনোর চেষ্টা করলাম । কি সব উল্টো পাল্টা চিন্তা মাথায় ভিড় করতে লাগল । ঐ সমস্ত কথা ভাবতে ভাবতে এক সময় চোখে গভীর ঘুম নেমে এল। কতক্ষন ঘুমিয়েছি জানিনা তবে তারপর যে ঘটনা টা আমার ঘুম ভাঙিয়ে দিল তা আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারলাম না। নীচের ঘরে কেউ যেন ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে কিন্তু এতো রাতে এই নদী পাড়ের নির্জন বাড়ীতে কে ই বা কাঁদতে আসবে? যে দুই কুল হারিয়ে সর্বহারা হয়েছে সে ও না । আমি চেঁচিয়ে বললাম কে? কে ওখানে ? সঙ্গে সঙ্গে কান্না থেমে গেল । যেন এক মূহুর্তের জন্য পৈশাচিক নীরবতা গ্রাস করল বাড়িটি কে। সেই থিকথিকে পুরু অন্ধকার ভেদ করে যেন অশরীরী দের আগমন হয়েছে সেই বাড়িতে। ঐ ঘটনার পর আমার আর ঘুম আসে নি । হঠাৎ মনে পড়ে গেল আজ ভূতচতুর্দশী র রাত। আজ নাকি অশরীরী আত্মারা পৃথিবীতে নেমে আসে এসব কথা তখন মনের কোনে জায়গা করে নিল। তাহলে কি মনের ভয়? না না তা কি করে হয়, আমি দিব্যি মনের জোরে প্রশ্ন করলাম। ভয় পেলে হয়তো এরকম কিছু করতে পারতাম না। মন কে আরো শক্ত করলাম লাঠি টা বাগিয়ে ধরে মাদুরের উপর চুপচাপ বসে রইলাম এবং এই সমস্ত ঘটনাকে পার্থিব জীবনের সঙ্গে মেল খাওয়ানোর চেষ্টা করলাম। হয়তো বেড়াল হতে পারে, নাহলে শেয়াল বা কুকুর এরকম কান্না করছে ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে। এই সব ভাবছি ঠিক তখনই হঠাৎ কেউ যেন সিঁড়ি বেয়ে ছাদ থেকে দৌড়ে নীচে নেমে চলে গেল, স্পষ্ট শুনতে পেলাম পায়ের শব্দ আমি যেন এতো অন্ধকারের মধ্যেও যেন তার উপস্থিতি টের পেলাম। আমি সঙ্গে সঙ্গে জানালা থেকে বাড়ির বাইরের দিকে টর্চের আলো ফেললাম তারপর যা দেখলাম তা দেখে আমার মেরুদন্ড বেয়ে ঠান্ডা স্রোত নেমে গেল। দেখলাম একজন সাদা থান কাপড় পরা মূর্তি নদীর দিকে দ্রুত গতিতে চলে গেল। যেন সে পা চালিয়ে দৌড়ায় নি অথচ তার দ্রুততা এতটাই যে চোখের পলকে মিলিয়ে গেল। আমি ভয় পেয়ে গেলাম তাকিয়ে দেখি মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম। কোনো সাধারণ মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব নয় । তবে কি? এরপর আমার মনের ভয় । মনের মধ্যে ভয় নামক জিনিস টি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সারা বাড়ি জুড়েই যেন অশরীরী দের কানাকানি, কোনো অদৃশ্য চোখ যেন আমার উপর নজর রেখে চলেছে প্রতিনিয়ত। তাই স্থির করলাম আর ঘুম নয় আর যা দেখলাম তাতে আর ঘুম আসার কথাও না। আজ সারা রাত জেগেই কাটাবো। ভোরের দিকে একটু ঘুমিয়ে গেছলাম কিন্তু পেঁচার কর্কশ ডাকে আমার ঘুম ভেঙে গেল। অপেক্ষা করতে লাগলাম সকাল হওয়ার। কিছুক্ষণ পর পূব আকাশে সূর্যের প্রথম আভা ফুটল। আমিও আগের দিনের রাতে ঘটে যাওয়া সমস্ত ঘটনার উত্তর খুঁজতে খুঁজতে বাড়ির পথে হাটা শুরু করলাম। বাড়ি পৌছাতে সকাল হয়ে গেল। শ্যামল বলল কিরে কাল রাতে কি কিছু ঘটেছিল? কিছু দেখিসনি? তারপর আমি আগের রাতের সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। আমি ওই পোড়ো বাড়িতে রাত কাটিয়ে এসেছি শুনে গ্রামের দুজন বয়স্ক লোক এল শ্যামলদের বাড়িতে। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করল কাল রাতে ঠিক কি কি ঘটেছিল। আমি রাতের সমস্ত ঘটনা টা খুলে বললাম। সব কিছু শুনে একজন ভদ্র লোক বললেন শোনো তাহলে, আমার ঠাকুরদার কাছে যা শুনেছি। ঐ বাড়িটি এই এলাকার একজন নামকরা জমিদারের বাড়ি ছিল। তার প্রভাব প্রতিপত্তি এতো ছিল যে এলাকার লোকজন তাকে রাজা বলে সম্মান করতো। কোনো এক রাতে নদী পথে আসা দস্যুর দল ঐ জমিদার বাড়িতে হামলা করে সেদিন ছিল কালীপুজোর আগের দিন অর্থাৎ ভূত চতুর্দশীর রাত, নিঝুম নিশুতি রাতে ঐ জমিদার ও তার পরিবারের সকলকে হত্যা করে বাড়িতে লুটপাট চালায়। এরপর কেটে গেছে বহু বছর, নদীতে বয়ে গেছে বহু জল । তারপর একদিন আমাদের গ্রামের একজন লোক নদীতে গিয়েছিল মাছ ধরতে ফিরতে তার রাত হয়ে যায়। সেদিন ছিল অমাবস্যা তিথি ঐ বাড়ির পাশ দিয়ে আসার সময় সে শুনতে পায় কারা যেন বাড়ির মধ্যে কথা বলছে। সে ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে আসে। এছাড়াও আরো অনেকে এরকম ঘটনার সাক্ষী থেকেছে। তারপর আর কেউ রাতের বেলা ওদিকে যায় না। যারা নদীতে মাছ ধরতে যায় তারা বিকেলের মধ্যে বাড়ি ফিরে আসে। আমি তার পরের দিন কালী পূজো দেখে বাড়ি ফিরে এলাম। কিন্তু আমি আজও ঐ সমস্ত ঘটনার উত্তর পাইনি। যা কিছু ঘটেছে তার সব কিছুই কি মনের কল্পনা? মনের ভুল? কিন্তু একই সঙ্গে এত কিছু ভুল কী হতে পারে?। তাহলে কি সত্যিই তারা তাদের উপস্থিতি জানান দিয়ে গেল?